বছর ঘুরে এলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর
গোবিন্দ হালদার এর রচিত_________
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে
বাংলার স্বাধীনতা আনলো যারা,
আমরা তোমাদের ভুলব না।
আমরা তোমাদের ভুলবো না।।
বিজয়ের মাস ডিসেম্বর লক্ষ শহীদের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে আমরা পেয়েছি আমাদের প্রাণের ভাষা বাংলাকে এবং মাতৃভূমি বাংলাদেশকে।
১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসেই পূর্ব পাকিস্তান নাম মুছে দিয়ে বাংলাদেশ নামের জন্ম হয়। আর এই বাংলার জন্মের পেছনে রয়েছে লক্ষ শহীদদের তাজা রক্ত তাজা প্রাণ ও মা বোনের ইজ্জত। তাজা রক্ত ও ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি লাল সবুজের এই পতাকা।
স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তি বাহিনী কে ১১ টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। বাংলাদেশকে প্রথম স্বাধীনতা ঘোষণাকারী প্রতিবেশী দেশ ভারত। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ চলা কালিন প্রতিবেশী দেশ ভারত বাংলাদেশকে অনেক সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। বাঙালিরা অনেকেই আশ্রয় নিয়েছিলেন ভারতে। বাঙালিদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করেছে ভারত ।
ভারত বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে সরাসরি অংশ নেয়। পাকিস্তান বাহিনী আতর্কিতে ৩ ডিসেম্বর বিভিন্ন ভারতীয় বিমান ঘাটিতে হামলা চালালে শুরু হয় সর্বাত্নক যুদ্ধ । ভারত সার্বভৌম দেশ হিসেবে ৬ ডিসেম্ভর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। এর ফলে বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধে সফল পরিণতির দিকে এগিয়ে যায়।
৮-৯ ডিসেম্বর কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী শহর যৌথ বাহিনীর দখকে আসে। যশোর, চাঁদপুর, সিলেট, দাউদকান্দি ও ফেনি বিস্তীর্ণ এলাকা যৌথ বাহিনীর অধিকার এ আসে। ১১-১২ ডিসেম্বর ময়মনসিং, হিলি, কুষ্টিয়া, খুলনা, রংপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর, সিরাজগঞ্জ মুক্ত হলে যৌথ বাহিনী ঢাকা দখলে প্রাধান্য দেয়। ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় বিমান হামলা অব্যাহত রাখে।
১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১৬ ডিসেম্বর আত্নসমর্পণের পূর্বেঘৃন্য চক্রান্ত এবং নিলনকশা অঙ্কন করে বাংলাদেশের শিক্ষা সংস্কৃতি ও সভ্যতাকে চিরদিনের জন্য পঙ্গু করে দেয়ার জন্য তাদের দোসরদের সাহায্যে বাংলার সাহিত্যিক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজিবীসহ অসংখ্য জ্ঞানী গুনী ব্যাক্তিদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং তাদের নির্মম ভাবে হত্যাকরে। নিহতদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মুনীর চৌধুরী, ডা. ফজলে রাব্বি, জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, জিসি দেব, শহিদুল্লা কায়সার, আনোয়ার পাশা, সাংবাদিক সেলিনা পারভিন প্রমুখ।
বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সম্মিলিত আক্রম্নের ফলে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী যুদ্ধ বিরতির সিদ্ধান্ত নেয়। ১৬ ডিসেম্বর ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে ৯৩,০০০ সৈন্য নিয়ে লে. জে. আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী যৌথ বাহিনীর অধীনায়ক লে. জেনারেল জগজিৎ সিং আরোরার কাছে আত্নসমর্পন করেন।